প্রকাশিত হয়েছে Jun 23, 2025
Author
Rubel

[৪৯] চীন আর রাশিয়াই ইরানের পতন ঠেকাবে!
ইরানের পতন হলে চীনের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। কারণ চীনের বিশাল পরিমাণ তেল আমদানির অন্যতম উৎস ইরান। দ্বিতীয়ত, চীনের জন্য ইরান হলো “Belt and Road Initiative” (BRI)-এর স্ট্র্যাটেজিক করিডর।
অপরদিকে ইরান হচ্ছে রাশিয়ার জন্য একটি কৌশলগত ভূখণ্ড (Strategy Depth), যার মাধ্যমে সে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা বলয়কে বশে রাখতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পৃথিবীর মানচিত্রের পূর্ব পাশের দেশগুলোতে মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার প্রচেষ্টাকে পরিভাষা হিসেবে "Atlanticist expansion" বলা হয়। যা যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের বিশেষত NATO ও EU কর্তৃক দখলদারিত্বকে বোঝায়। সেখানে ইরান হচ্ছে এমন এক ভূখণ্ড, রাষ্ট্র বা শক্তি যা এই পশ্চিমা আধিপত্য ও সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান প্রতিরোধ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।
যেকারণে ইরানকে বলা হচ্ছে "Neo-Colonial Resistant" বা পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী ও উপনিবেশবাদী প্রভাব প্রতিরোধের অন্যতম এক্টর।
ফলে বলা হয়ে থাকে যে, চীন আর রাশিয়াই ইরানের পতন ঠেকাবে! ইরান বৈশ্বিক জ্বালানির ধমনী হিসেবে পরিচিত হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিলেও হিজ্রেল ও যুক্তরাষ্ট্র চাইলেই ইরানে পারমাণবিক হামলা চালাতে পারবে না।
ইরাক যুদ্ধের পর থেকেই ইরান টিকে থাকার লড়াইটা করছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার যতগুলো সম্ভাব্য পদ্ধতি রয়েছে ইরান সেদিকেই মনযোগ দিয়েছে। কখনো তেল অস্ত্র ব্যবহার করেছে, কখনো প্রক্সি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। এর মাঝে পারমাণবিক স্থাপনা সম্প্রসারিত করেছে, ইউরেনিয়ামও বৃদ্ধি করেছে। ফুল স্কেল ওয়ারের জন্য ইরানের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।
একদিনে ইরানের নিজস্ব সক্ষমতা, অপরদিকে চীন-রাশিয়া বলয়। ফলে এই অঞ্চলে একটা "Eurasianism" ধারণার বিস্তৃতি ঘটছে। যার মানে হচ্ছে রাশিয়া, চীন, ইরান, তুরস্ক প্রভৃতি দেশ মিলে এখানে একটি অ-পশ্চিমা বলয়ের উত্থান ঘটছে।
মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া,
লেখক- দি এ্যানাটমি অব ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স, দি কসমিক প্লে অব কন্টেমপোরারি গ্লোবাল পলিটিক্স।